কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা এবং কালোজিরা খেলে কি হয় বিস্তারিত জেনে নিন। কালোজিরার গুনা-গুন বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এটি একটি খুবই উপকারি ঔষধি মসলা জাতীয় খাবার। আমাদের দেশে কালজিরা বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা হয়।

আপনারা যারা কালোজিরা খাবার নিয়ম ও উপকারিতা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। এই পোস্টে কালোজিরা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। সাস্থগত ভাবে উপকার পেতে কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি আলোচনা করা হল।

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

আপনি চাইলে কালোজিরা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে বাড়তি কোনো কিছু করার জামেলা নাই। শুধু মুখে দিয়ে চিবিয়ে খেলেই হবে। কালোজিরার সাথে মধু, রসুন, তুলসী পাতা যোগ করতে পারেন। এতে আরও বেশি উপকার পাবেন।

আর অন্যটি হলো কোনো কিছুর মাধ্যমে কালোজিরা পিষিয়ে খাওয়া। আপনার ইচ্ছামত চাইলে মধু,রসুন ও হলুদ যোগ করতে পারেন।কালোজিরা ভর্তা করে খাওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভাজা রসুন ও কাঁচা মরিচ যোগ করতে হবে।

কালোজিরার তেলের সাথে বিভিন্ন রকম মিশ্রণ যোগ করা যেতে পারে যেমন, পুদিনা পাতার রস, কমলার রস ইত্যাদি মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও বহুল পরিচিত পদ্ধতি কালোজিরার সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়া সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি।

এলার্জি দুর করার জন্য কালোজিরার সাথে পেয়ারার পাতার রস মিশিয়ে খাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলকানি এলার্জি দুর হবে।

ওজন কমাতে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে কালোজিরা এক ওষুধ অন্যরকম ঔষধ। ওজন কমাতে আমরা বিভিন্ন উপায়ে কালোজিরা খেয়ে থাকি। তবে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে কালিজিরা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ওজন কমাতে পারবেন।

প্রথমে কালিজিরা কে গুঁড়ো করে নিন এবং লেবুর রস মধু দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং পরবর্তীতে একটি বাটিতে অথবা কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করুন।

দৈনিক কালোজিরার পেস্ট দুই থেকে তিন বেলা খাবেন এতে করে অল্প দিনের মধ্যে ওজন কমে যাবে। আপনি চাইলে কালোজিরা খালি পেটে চিবিয়ে খেতে পারেন এবং রাতে ঘুমানো যাওয়ার আগে খেতে পারেন। এটা নিয়মিত অভ্যাস করলে, কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে দেহের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস পাবে পাশাপাশি দেহ সতেজ ও সুস্থ থাকবে।

মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার নিয়ম

মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার নিয়ম হল কালোজিরা পিশিয়ে বাটির মধ্য সমপরিমাণ মধু মিক্স করে নিতে হবে। এবং সকালে বিকালে খেতে পারেন। আপনি চাইলে রাতে শুতে যাওয়ার আগেও খেতে পারেন। তবে চিবিয়ে খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি মধু ও কালোজিরা এক সাথে খেতে পারবেন না। হয় আগে কালোজিরা আগে চিবিয়ে খেয়ে তার পর মধু আলাদা ভাবে খেতে হবে। তাই পিষিয়ে খাওয়াই ভালো হবে।

কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন উপকার পেতে পারি। এছাড়া কালোজিরাকে সকল রোগের ঔষধ বলা হয়।

স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি

এক চামচ পুদিনা পাতার রসের সাথে এক চামচ কালোজিরা প্রতিদিন তিন বেলা খাবেন। এতে করে আপনার সরণ শক্তি বাড়বে। কালো জিরার মধ্য আন্টিসেপটিক রয়েছে যা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে এবং সরণ শক্তি বৃদ্ধি করে।

সর্দি কাশি সারাতে কালোজিরার ব্যাবহার

এক চামচ পরিমাণ কালোজিরা তার সমপরিমাণ মধু বা আদা মিশিয়ে এক কাপ চায়ের সাথে প্রতিদিন দুই থেকে তিন বার খাবেন। সর্দিকাশি শেরে যাবে।

হার্টের সমস্যার সমাধানে

একা চা চামচ কালোজিরা সাথে এক কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে দিনে তিনবার এক মাস খেতে হবে তাহলে আপনি হার্টের সমস্যার সমাধানে অনেক ভালো একটা ফল পাবেন এবং কালোজিরা নিয়মিত ব্যবহারে আপনার হার্টের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

পাইলস সমস্যা নিরাময়ে

এক চামচ মাখন ও তিলের তেল এবং কালিজিরার তেল মিশিয়ে সকালে খালি পেটে অন্তত দুই মাস খেতে হবে এর ফলে আপনার পাইলস সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে এবং পাইলস সমস্যার সমাধানে আপনি শারীরিকভাবে উন্নতি লাভ করবেন।

শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ নিরাময়ে

যাদের শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানি রোগ রয়েছে তারা নিয়মিত কালোজিরা গুড়া বা বাটা খেতে পারেন। কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে আপনি অতি দ্রুত শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং শ্বাসকষ্ট এ জাতীয় রোগের নিরাময়ের জন্য কালোজিরা হল সবচেয়ে ভালো ওষুধ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কালোজিরা প্রতিদিন এক গ্লাস পানিতে এক চামচ কালোজিরা মিশিয়ে খাবেন এতে করে আপনার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে এর ফলে আপনার শরীরে ডায়াবেটিসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

দেহের হরমোন বৃদ্ধিতে

যাদের দেহে হরমোন কম তারা নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন। এতে করে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের হরমোন বৃদ্ধি পাবেন এবং যৌন ক্ষমতা বাড়বে।

অনিয়মিত মাসিক সমস্যায়

যাদের অনিয়মিত মাসিক হয় তারা কালোজিরার সাথে কাঁচা হলুদ মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিন বার খাবেন তাদের মাসিক কিছুদিনের মধ্যেই ভালো ফলাফল পাবেন।

দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে

ছোট বয়সে শিশুদের যেমন তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের নিয়মিত কালিজিরার গুঁড়া লবনের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে শিশু শারীরিক গঠন ভালো হবে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পাবে তবে, দুই, তিন  বছরের বাচ্চাদেরকে কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করা যেতে পারে।

কালোজিরা নিয়ে প্রশ্ন ও কথাঃ

সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

সকলে গুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে একা চামচ পরিমাণ কালোজিরা মিশিয়ে খাবেন।

কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা

কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতা বলতে কিছু নেই। তবে সব জিনিসই বেশি খাওয়া ভালো না। তাই কম পরিমাণে খান কিন্তু প্রতিদিন খাবেন।

প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়

প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কোনো সমস্যা হয় না।

সকালে খালি পেটে কালিজিরা খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে কালিজিরা খেলে মেটাবোলিজম বাড়ে খাদ্য তাড়াতাড়ি পরিপাক হয়।

কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়?

না, কালোজিরা খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে অতিরিক্ত খাবেন না।

টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়?

টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে শারীরিক উন্নতি হয় এবং স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফুলের শরীরে অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহারের করা যাবে?

পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহারের করা যেতে পারে। এখন বাজারে কালোজিরার তেল পাওয়া যায় অথবা আপনি বাড়িতেও পিসিয়ে তেল বানাতে পারেন। কালোজিরার তেলের সাথে মধু মিক্স করে পুরুষাঙ্গকে ব্যাবহার করলে ব্লাডার শক্ত হয় এবং মসৃণ হয় ও কমলিয়তা ভাব আসে।

2 thoughts on “কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা”

Leave a Comment